সমুদ্রস্বর্গ মালদ্বীপ ভ্রমণে যা দেখে মুগ্ধ হবেন

- আপডেট সময় : ০৪:১০:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ৯৮ বার পঠিত

বাংলাদেশ কন্ঠ ।।
অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত দেশ মালদ্বীপ পর্যটনের জন্য সারা বিশ্বে সুপরিচিত। সুন্দর দ্বীপ, মনোমুগ্ধকর সৈকত ও পাঁচতারকা রিসোর্ট থাকায় দেশটি বিলাসবহুলভাবে ছুটি কাটানোর জন্য আদর্শ। সাদা বালির সৈকত, স্বচ্ছ পানি ও নীল আকাশের জন্যও মালদ্বীপের খ্যাতি আছে। সারা বিশ্বে ‘সমুদ্রস্বর্গ’ হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের।
এশিয়ার সবচেয়ে ছোট ও পৃথিবীর সবচেয়ে নিচু দেশ মালদ্বীপ। প্রায় শতভাগ মুসলিমের দেশ মালদ্বীপে গত ১৯ মার্চ পবিত্র রমজানের দিনে ভ্রমণে গিয়েছি। সাড়ে তিন ঘণ্টার বিমানপথ পাড়ি দিয়ে মালদ্বীপের লাগোয়া দ্বীপ হুলু মালেতে ‘ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে’ গিয়ে নামলাম। সাগর ছুঁয়েই রানওয়ে।
বিমানের জানালা দিয়ে যখন সাগরের নীল জলরাশি ও ছোট্ট ছোট্ট দ্বীপ দেখা যাচ্ছিল, তখন মনে মনে ভাবতে লাগলাম, ‘বিমান নামবে কোথায়’? তারপর সাগরের পানি ছুঁইছুঁই অবস্থায় মালে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান অবতরণ করল। ইমিগ্রেশন লাইন বড়, কিন্তু ছাড়া পেতে সময় লাগল খুবই কম।
সন্ধ্যায় সমুদ্র তীরে বসে মুসলিমরা ইফতারি করছেন, পাশেই জলকেলিতে ব্যস্ত স্বল্পবসনার নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতীরা। কারও সঙ্গে কারও কোনো বিবাদ কিংবা অহেতুক ধর্মীয় উপদেশ দানের উত্তেজনা, মাতম দেখিনি। বিপরীতমুখী চরিত্রের এই সম্প্রীতির সম্পর্কের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছি।
ইফতার শেষে হোটেলে পৌঁছে বিশ্রাম করতে লাগলাম। হোটেলের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে পুরো সমুদ্র দেখা যায়। রাতে সমুদ্রের নীলজলের ঢেউ তীরে আচড়ে পড়ছে। ঢেউয়ের গর্জন ও দমকা বাতাসে অন্যরকম একটি অনুভূতি। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ঘণ্টাখানেক সেই দৃশ্য উপভোগ করলাম।
হুলু মালে থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে কাফু অ্যাটলে অবস্থিত মাফুশি। সেখানে পৌঁছে আমরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে লাগলাম। সূর্যাস্ত দেখার জন্য ইফতার নিয়ে সমুদ্র তীরে বসলাম। মনে হচ্ছিল, রক্তিম সূর্যটা যেন ধীরে ধীরে সমুদ্রে নেমে যাচ্ছে। সৈকতে রাতে ডিজে পার্টির আয়োজন করে হোটেল কর্তৃপক্ষ।
নানা দেশ থেকে আসা শত শত পর্যটক গানের সঙ্গে নেচে-গেয়ে জমিয়ে তোলেন পার্টি। রাত গভীর হয়, তবুও থামে না গান, নাচ আর রঙিন আলোর ঝলকানি। রাতে তাজা টুনা মাছে গ্রিল ও রেড স্ন্যাপারের বারবিকিউ খেতে খেতে আমরা স্থানীয় ফলের জুসে চুমুক দিই। দ্বীপটি ঘোরাঘুরি করে সেহরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। পরদিন সকালে আবার ভ্রমণতরীতে আমরা মালে শহরের উদ্দেশে রওনা হই।
মসজিদের পাশেই মালদ্বীপের সব মন্ত্রণালয় ও প্রেসিডেন্ট ভবন। প্রেসিডেন্টের অফিস আর দশটা সাধারণ অফিসের মতোই বহুতল ভবন, কিন্তু বাইরে কোনো দেয়াল নেই, নেই কোনো নিরাপত্তাকর্মী। খুবই আশ্চর্য হলাম।