ঢাকা ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

র‌্যাব হেফাজতে মায়ের মৃত্যুর পর এবার নিখোঁজ পুত্র

বাংলাদেশ কণ্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৪:৩১:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩ ৩২ বার পঠিত

নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁয় র‌্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিন এর মৃত্যুর পর এবার তার ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকত নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার শহরের খাস নওগাঁ মহল্লায় সৈকত এর নানী বাড়ি এবং জনকল্যাণ মহল্লার ভাড়া বাড়ির কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তার মুখে পড়েছেন তার স্বজনরা।
জানা যায়, সুলতানা জেসমিন নওগাঁ শহরের কালিতলা মহল্লার নওগাঁ পৌরসভা ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকুরী করতেন। শহরের জনকল্যাণ মহল্লার একটি ভাড়া বাসায় থেকে নিয়মিত অফিসে যাতায়াত করতেন তিনি। প্রতিদিনের ন্যায় গত বুধবার সকালে বাড়ি থেকে অফিসে যাওয়ার পথে সকাল সাড়ে ১০টায় নওযোয়ান মাঠের সামনে পৌঁছালে তাকে আটক করে নিয়ে যায় র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। আটকের প্রায় ২ ঘন্টা পর দুপুরে জেসমিনকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে র‌্যাব। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। রামেকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। শনিবার রামেকে পোস্টমর্টেম শেষে বিকেলে নওগাঁ সরকারী গোরস্তানে র‌্যাবের গোপন উপস্থিতিতেই লাশটি দ্রুত দাফন সম্পন্ন করা হয়। এরপরই র‌্যাবের বিরুদ্ধে জেসমিনকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলার অভিযোগ তোলেন তার স্বজনরা। রবিবার এবং সোমবার বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার শিরোনাম হয়। সুলতানা জেসমিন এর মৃত্যুতে যেই মুহুর্তে তার পরিবারজুড়ে শোকের মাতম বইছে, ঠিক সেই মুহর্তে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তার ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকতকে সোমবার থেকে আর কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। সরেজমিন সোমবার দুপুরে শহরের জনকল্যান মহল্লায় সৈকত এর ভাড়া বাড়িতে গেলে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে সৈকত এর সন্ধানে খাঁস নওগাঁ মহল্লায় তার নানা বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাড়িটির ভেতরে তার মামা সোহাগ নিজেকে ভেতর থেকে তালাবদ্ধ রেখেছেন। সৈকত বাড়িতে নেই জানিয়ে আড়ালে চলে যান তিনি।সন্ধ্যায় মুঠোফোনে সৈকত এর অবস্থান জানতে চাইলে তার মামা সোহাগ বলেন, সৈকত কোথায় আছে আমার জানা নেই। বোনকে হারিয়ে এমনিতেই আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। দয়া করে আমাদের নতুন করে আর কোন প্রশ্ন করবেন না।নিহত সুলতানা জেসমিন এর মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু বলেন, গত রাতে মায়ের শোকে কাঁদতে কাঁদতে প্রতিবেশী এক আত্মীয়ের বাড়িতে সৈকত ঘুমিয়ে ছিলো। এরপর সকাল থেকে তাকে আর দেখিনি। শুনলাম তাকে নাকি খুুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা চরম দুঃশ্চিন্তার মধ্যে আছি। তার সন্ধানে খোঁজাখুজি অব্যাহত আছে।নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফৌজিয়া হাবিব খান বলেন, শহর থেকে কোন যুবক নিহত হয়েছেন এমনটি জানা নেই। তার স্বজনরা সাধারন ডায়েরী করলে তাকে খুঁজে পেতে সব ধরনের আইনগত সহযোগীতা প্রদান করা হবে।

র‌্যাব হেফাজতে মায়ের মৃত্যুর পর এবার নিখোঁজ পুত্র

আপডেট সময় : ০৪:৩১:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁয় র‌্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিন এর মৃত্যুর পর এবার তার ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকত নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার শহরের খাস নওগাঁ মহল্লায় সৈকত এর নানী বাড়ি এবং জনকল্যাণ মহল্লার ভাড়া বাড়ির কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে চরম দুঃশ্চিন্তার মুখে পড়েছেন তার স্বজনরা।
জানা যায়, সুলতানা জেসমিন নওগাঁ শহরের কালিতলা মহল্লার নওগাঁ পৌরসভা ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকুরী করতেন। শহরের জনকল্যাণ মহল্লার একটি ভাড়া বাসায় থেকে নিয়মিত অফিসে যাতায়াত করতেন তিনি। প্রতিদিনের ন্যায় গত বুধবার সকালে বাড়ি থেকে অফিসে যাওয়ার পথে সকাল সাড়ে ১০টায় নওযোয়ান মাঠের সামনে পৌঁছালে তাকে আটক করে নিয়ে যায় র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। আটকের প্রায় ২ ঘন্টা পর দুপুরে জেসমিনকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে র‌্যাব। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। রামেকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। শনিবার রামেকে পোস্টমর্টেম শেষে বিকেলে নওগাঁ সরকারী গোরস্তানে র‌্যাবের গোপন উপস্থিতিতেই লাশটি দ্রুত দাফন সম্পন্ন করা হয়। এরপরই র‌্যাবের বিরুদ্ধে জেসমিনকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলার অভিযোগ তোলেন তার স্বজনরা। রবিবার এবং সোমবার বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার শিরোনাম হয়। সুলতানা জেসমিন এর মৃত্যুতে যেই মুহুর্তে তার পরিবারজুড়ে শোকের মাতম বইছে, ঠিক সেই মুহর্তে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তার ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকতকে সোমবার থেকে আর কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। সরেজমিন সোমবার দুপুরে শহরের জনকল্যান মহল্লায় সৈকত এর ভাড়া বাড়িতে গেলে তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে সৈকত এর সন্ধানে খাঁস নওগাঁ মহল্লায় তার নানা বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাড়িটির ভেতরে তার মামা সোহাগ নিজেকে ভেতর থেকে তালাবদ্ধ রেখেছেন। সৈকত বাড়িতে নেই জানিয়ে আড়ালে চলে যান তিনি।সন্ধ্যায় মুঠোফোনে সৈকত এর অবস্থান জানতে চাইলে তার মামা সোহাগ বলেন, সৈকত কোথায় আছে আমার জানা নেই। বোনকে হারিয়ে এমনিতেই আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। দয়া করে আমাদের নতুন করে আর কোন প্রশ্ন করবেন না।নিহত সুলতানা জেসমিন এর মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু বলেন, গত রাতে মায়ের শোকে কাঁদতে কাঁদতে প্রতিবেশী এক আত্মীয়ের বাড়িতে সৈকত ঘুমিয়ে ছিলো। এরপর সকাল থেকে তাকে আর দেখিনি। শুনলাম তাকে নাকি খুুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে আমরা চরম দুঃশ্চিন্তার মধ্যে আছি। তার সন্ধানে খোঁজাখুজি অব্যাহত আছে।নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফৌজিয়া হাবিব খান বলেন, শহর থেকে কোন যুবক নিহত হয়েছেন এমনটি জানা নেই। তার স্বজনরা সাধারন ডায়েরী করলে তাকে খুঁজে পেতে সব ধরনের আইনগত সহযোগীতা প্রদান করা হবে।