যুদ্ধের মধ্যে পড়ার ঝুঁকি নিয়েই ইউক্রেনে ফিরে যাচ্ছেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
- আপডেট সময় : ০২:০৬:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩ ৪২ বার পঠিত
নিজস্ব প্রতিনিধি:
বিদেশি শিক্ষার্থীরা, বিশেষ করে ভারতের মেডিকেল শিক্ষার্থীরা যুদ্ধে পড়ার ঝুঁকি নিয়েই ইউক্রেনে ফিরে যাচ্ছে। তাদের একজন ঋষি দ্বিভেদী। তিনি তার ডাক্তারি পড়া শেষ করার জন্য ইউক্রেনে ফিরে আসেন।
২৫ বছর বয়সী এই যুবক বলেন, ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলার আগে আমাদের সাইরেন দিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। দিনে অন্তত চারবার সাইরেন বাজে।
উত্তরপ্রদেশের কনৌজের বাসিন্দা, ঋষি মেডিকেলের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র। তিনি ইউক্রেনের লভিভ ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে মেডিসিন এবং সার্জারিতে স্নাতকোত্তর কোর্স করছেন। গত অক্টোবরে কোর্স শেষ করার জন্য ফিরে গেছেন এ যুবক।
যুদ্ধের শুরুতে বন্দুকের আঘাতে ২২ বছর বয়সী মেডিকেল ছাত্র মারা যাওয়ার পরে ১৮,০০০ ছাত্র সহ প্রায় ২৩,০০০ ভারতীয়কে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ওই ছাত্রদের অনেকেই ইউক্রেনে ফিরে গেছেন। তারা বলেন, ডাক্তার হিসেবে কাজ করার আর কোনো বিশেষ উপায় নেই।
ঋষির মতো অন্তত ১১০০ শিক্ষার্থী এখন ইউক্রেনে বসবাস করছেন। বেশিরভাগই লভিভ, উজগোরোদ ও তেরনোপিলের মতো পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরগুলোতে রয়েছেন ।ওই অঞ্চলে রাশিয়ার বিমান হামলার আশঙ্কাও রয়েছে। কিন্তু শহরগুলো পূর্ব যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক দূরে।
শুধু ভারতীয় ছাত্ররাই নয় যারা ইউক্রেনে ফিরে এসেছে। কিছু আফ্রিকান শিক্ষার্থীও লভিভে রয়েছে। বাকিরা এখনও জানেন না কী করবেন।
“আমরা জানি না আমরা আমাদের কোর্সটি শেষ করতে পারব কি না,” বলেছেন সৃষ্টি মোজেস, লভিভে বসবাসকারী চতুর্থ বর্ষের একজন মেডিকেল ছাত্রী। ‘হেলিকপ্টার বা যুদ্ধবিমান মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেলে তখন আর ঘুমাতে পারি না। সব সময় ভয়, এই বুঝি হামলা শুরু হলো।
সৃষ্টি আগে যেখানে থাকতেন, সেখানে প্রায়ই বিদ্যুৎ থাকতো না। তাই উত্তর ভারতীয় শহর দেরাদুনের স্থানীয় বাসিন্দা সৃষ্টিকে নিয়মিত বিদ্যুৎ থাকে এমন একটি উচ্চবিত্ত এলাকায় ফ্ল্যাট নিতে হয়েছিল।
শিক্ষার্থীদের মতে, ইউক্রেনে সম্পূর্ণ মেডিকেল কোর্স সম্পন্ন করার খরচ ভারতের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের খরচের অর্ধেকেরও কম।
লভিভে ফিরে আসা ছাত্র শশাঙ্কের বাবা মৃত্যুঞ্জয় কুমার বলেছেন যে ভারতের বেসরকারি কলেজগুলি ৭০ লক্ষ রুপি বেশি চার্জ করে, ইউক্রেনে তারা প্রায় ২৫ লক্ষ রুপি নেয়।
লভিভে বসবাসকারী ঋষি দ্বিভেদী বলেন, ফিরে আসার এক মাস পর্যন্ত আমাদের নিয়ে চর্চা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন কেউ বিশেষ বিরক্ত করে না।
কিন্তু চরম অনিশ্চয়তায় কাটছে তাদের প্রতিটি দিন। ঋষি বলেন, আমরা অভিভাবকদের বলেছি, যদি আবার যুদ্ধ শুরু হয় এবং আমাদের পালাতে হয় তাহলে আমরা নিজেরাই ব্যবস্থা করব। কাছের সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে নেবো।