প্রস্তুত শোলাকিয়া ঈদগাহ, চার স্তরের নিরাপত্তায় সকাল দশটায় জামাত
- আপডেট সময় : ০২:৪৮:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০২৪ ৮২ বার পঠিত
শফিক কবীর, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য প্রস্তুত দেশের প্রাচীন ও কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ। জেলা শহর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পূব দিকে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত এই ঈদগাহে এবছর অনুষ্ঠিত হবে ঈদুল ফিতরের ১৯৭তম ঈদ জামাত। ঈদের জামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়।
ইতোমধ্যে, জেলা প্রশাসন, ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভা যৌথভাবে ঈদগাহের ছোট-বড় গর্ত ভরাট, বালু ফেলে সমান করে মাঠকে নামাজ আদায়ের উপযোগী করা এবং মাঠের চতুর্দিকে সৌন্দর্য্যবর্ধনের কাজ সম্পন্ন করেছে।
মুসল্লিদের জন্য পর্যাপ্ত অস্থায়ী ওজুথানা নির্মাণ ও পানীয় জলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা ও প্রস্তুতির বিষয়ে গত বুধবার শোলাকিয়া ঈদগাহে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রোসলে শেখ এবং র্যাব-১৪ ময়মনসিংহ ক্যাম্পের অধিনায়ক মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান পৃথক পৃথক প্রেস ব্রিফিং করেন।
তারা জানান, এবছর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যান্য বারের তুলনায় দেড়গুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। চার স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢাকা থাকবে ঈদগাহ ও আশেপাশের পুরো এলাকা। প্রায় ১৩শ ইউনিফর্ম ও সিভিল পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্য ছাড়াও আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান, র্যাব, বিজিবি নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। এবং বিভিন্ন পয়েন্টে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ দায়িত্ব পালন করবে।
তারা আরো জানান, মাঠের পাঁচটি প্রবেশপথে থাকবে আর্চওয়ে। মাঠে ও মাঠের বাইরে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। মাঠে প্রবেশের আগেই বিভিন্ন চেকপোস্টে মুসল্লিদের মেটাল ডিটেক্টর দ্বারা তল্লাশি করা হবে। শক্তিশালী ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে ঈদগাহ ও এর আশেপাশের এলাকা নিবিড় পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা হবে। ঈদের দিন মাঠে আগত মুসল্লিদের প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিতে সকাল থেকেই তিনটি মেডিকেল টিম দায়িত্ব পালন করবে।
তারা জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদের দিন মুসল্লিদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দু’টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। ভৈরব থেকে সকাল ৬টায় কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে একটি ট্রেন ছেড়ে আসবে এবং ময়মনসিংহ থেকে সকাল পৌনে ৬টায় অপর একটি ট্রেন কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। নামাজ শেষে বেলা ১২টায় দু’টি ট্রেনই ভৈরব ও ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। মুসল্লিদের শুধু জায়নামাজ নিয়ে মাঠে প্রবেশের পরামর্শ দিয়েছে ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি।
এবছরও শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ জামাতে ইমামতি, খুতবা ও দোয়া পাঠ করার কথা রয়েছে। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন বড়বাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শোয়াইব বিন আব্দদুর রউফ।
প্রসঙ্গত মুঘল আমল থেকেই এ মাঠে ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মাঠে প্রতি বছর দুই ঈদের জামায়াত আদায় করছেন দেশ বিদেশের লাখো লাখো মুসুল্লিরা।