ঢাকা ০৮:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo অপো এ৫ প্রো’-এর বিক্রিতে রেকর্ডর Logo অসচ্ছল ও দরিদ্র মানুষের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করলেন মাওলানা আলহাজ্ব মো; সিফাতউল্লাহ Logo রমজান ও ঈদের সেরা মুহূর্ত ক্যাপচার করে জিতে নিন ভিভো ভি৫০ ফাইভজি Logo ৬০০০ এমএএইচ ব্লুভোল্ট ব্যাটারির স্মার্টফোনের ভিভো ভি৫০ ফাইভজি Logo হাসপাতালে এ আর রহমান Logo ৭২ ঘণ্টা সময় না পেলে খেলবে না রিয়াল মাদ্রিদ! Logo যুক্তরাষ্ট্রে শক্তিশালী টর্নেডোর আঘাতে ৩৪ জন নিহত Logo ৯ দুর্বল ব্যাংককে ২৯ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক Logo আবরার ফাহাদ হত্যায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ আসামির যাবজ্জীবন বহাল Logo পিরোজপুর শারিকতলা ডুমুরিতলা ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত।

নিয়োগ ইস্যুতে উত্তাল ইবি প্রশাসন ভবন 

বাংলাদেশ কণ্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৮:০২:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫ ১২৫ বার পঠিত
বাংলাদেশ কন্ঠ প্রতিবেদক।।
সাকিব আসলাম, ইবি প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রশাসন ভবনে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দিনভর উত্তেজনা ও ত্রিমুখী হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের অপসারণ ও যোগ্য ব্যক্তির নিয়োগের দাবিতে অবস্থান নিলে উত্তেজনার সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। এসময় ছাত্রদল নেতারা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করলে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকরাও সেখানে ঢুকতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে হট্টগোলের শব্দ শুনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে জড়ো হতে থাকে বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের অপসারণ এবং তদস্থলে অন্য কাউকে নিয়োগের দাবি জানান। এসময় তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের বাইরে হট্টগোল শুরু করলে এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ  উপস্থিত হন।
তারা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করার পর তাদের সাথে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকরাও সেখানে প্রবেশ করে। কিন্তু সাহেদ আহম্মেদ উপাচার্যের সম্মতিতে সাংবাদিকদের বের হয়ে যেতে বলেন। সাংবাদিকরা সেখান থেকে বের হয়ে বাইরে অবস্থান করে। এসময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপাচার্যের কার্যালয়ের দরজা আটকে রাখতে দেখা যায়।
পরে উপাচার্যের কার্যালয়ের ভেতর থেকে কথা-কাটাকাটির আওয়াজ আসলে সাংবাদিকরা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এদিকে এই হট্টগোলের শব্দ আমবাগান থেকেও শোনা যায় এবং সেখানে অবস্থানরত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ দৌড়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশের পর সেখানে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামানকে কথা কাটাকাটি করতে দেখা যায়৷
উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করার পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং উপাচার্যকে এ ঘটনা তদন্ত করে দুই দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আল্টিমেটাম দেন।  বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী অভিযোগ করেন, এক জুনিয়র শিক্ষক তার সঙ্গে অসদাচরণ করলেও উপাচার্য কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ ঘটনার বিচার দাবি করে তিনি আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
অপরদিকে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, রেজিস্ট্রারের বিষয়ে আলোচনার জন্য ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয় এবং তাদের সহযোগীদের বাইরে থাকতে বলা হয়েছিল।
এদিকে এসব ঘটনার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে তার কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে সেখানে তালা লাগিয়ে দেয় কর্মকর্তা- কর্মচারীদের মধ্যেকার একটি পক্ষ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে উপস্থিত হয়ে তার কার্যালয় খুলে দেন এবং সেখানে তাকে তার কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট অভিযোগ করেন, প্রশাসনকে জিম্মি করে রাখার চেষ্টা চলছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনছে। তিনি উল্লেখ করেন, পূর্ববর্তী আলোচনায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার রেজিস্ট্রার নিয়োগের বিষয়ে সম্মতি দিলেও আজকের ঘটনাগুলো আন্দোলনের চেতনার অপব্যবহার বলে মনে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার পরও প্রশাসন যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি, যা অস্থিতিশীলতা বাড়াচ্ছে। তাই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, অন্যথায় শিক্ষার্থীরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
এদিকে, সাংবাদিকদের কাজে বাধা ও শিক্ষকদের লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বিকেলে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ মানববন্ধন করে। সংগঠনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের অপসারণ ও সেই পদে নতুন যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগের বিষয়ে সোমবার উপাচার্যের সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে নেতৃবৃন্দ শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজনকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব জানান এবং উপাচার্য তাতে সম্মতি জানান। তার প্রেক্ষিতে আজ বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে। পরে ছাত্রদল নেতারা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করলে আজকের ঘটনা ঘটে।
ট্যাগস :

নিয়োগ ইস্যুতে উত্তাল ইবি প্রশাসন ভবন 

আপডেট সময় : ০৮:০২:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশ কন্ঠ প্রতিবেদক।।
সাকিব আসলাম, ইবি প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রশাসন ভবনে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দিনভর উত্তেজনা ও ত্রিমুখী হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের অপসারণ ও যোগ্য ব্যক্তির নিয়োগের দাবিতে অবস্থান নিলে উত্তেজনার সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। এসময় ছাত্রদল নেতারা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করলে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকরাও সেখানে ঢুকতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে হট্টগোলের শব্দ শুনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে জড়ো হতে থাকে বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের অপসারণ এবং তদস্থলে অন্য কাউকে নিয়োগের দাবি জানান। এসময় তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের বাইরে হট্টগোল শুরু করলে এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ  উপস্থিত হন।
তারা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করার পর তাদের সাথে ক্যাম্পাসের সাংবাদিকরাও সেখানে প্রবেশ করে। কিন্তু সাহেদ আহম্মেদ উপাচার্যের সম্মতিতে সাংবাদিকদের বের হয়ে যেতে বলেন। সাংবাদিকরা সেখান থেকে বের হয়ে বাইরে অবস্থান করে। এসময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপাচার্যের কার্যালয়ের দরজা আটকে রাখতে দেখা যায়।
পরে উপাচার্যের কার্যালয়ের ভেতর থেকে কথা-কাটাকাটির আওয়াজ আসলে সাংবাদিকরা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এদিকে এই হট্টগোলের শব্দ আমবাগান থেকেও শোনা যায় এবং সেখানে অবস্থানরত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ দৌড়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশের পর সেখানে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামানকে কথা কাটাকাটি করতে দেখা যায়৷
উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করার পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং উপাচার্যকে এ ঘটনা তদন্ত করে দুই দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আল্টিমেটাম দেন।  বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী অভিযোগ করেন, এক জুনিয়র শিক্ষক তার সঙ্গে অসদাচরণ করলেও উপাচার্য কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ ঘটনার বিচার দাবি করে তিনি আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
অপরদিকে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, রেজিস্ট্রারের বিষয়ে আলোচনার জন্য ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয় এবং তাদের সহযোগীদের বাইরে থাকতে বলা হয়েছিল।
এদিকে এসব ঘটনার মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে তার কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে সেখানে তালা লাগিয়ে দেয় কর্মকর্তা- কর্মচারীদের মধ্যেকার একটি পক্ষ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে উপস্থিত হয়ে তার কার্যালয় খুলে দেন এবং সেখানে তাকে তার কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট অভিযোগ করেন, প্রশাসনকে জিম্মি করে রাখার চেষ্টা চলছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনছে। তিনি উল্লেখ করেন, পূর্ববর্তী আলোচনায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার রেজিস্ট্রার নিয়োগের বিষয়ে সম্মতি দিলেও আজকের ঘটনাগুলো আন্দোলনের চেতনার অপব্যবহার বলে মনে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার পরও প্রশাসন যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি, যা অস্থিতিশীলতা বাড়াচ্ছে। তাই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, অন্যথায় শিক্ষার্থীরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
এদিকে, সাংবাদিকদের কাজে বাধা ও শিক্ষকদের লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বিকেলে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ মানববন্ধন করে। সংগঠনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের অপসারণ ও সেই পদে নতুন যোগ্য ব্যক্তি নিয়োগের বিষয়ে সোমবার উপাচার্যের সাথে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে নেতৃবৃন্দ শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজনকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব জানান এবং উপাচার্য তাতে সম্মতি জানান। তার প্রেক্ষিতে আজ বিএনপিপন্থি কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে। পরে ছাত্রদল নেতারা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করলে আজকের ঘটনা ঘটে।