ঢাকা ০৮:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটিতে জয়ের সুবাস পাচ্ছেন নৌকার প্রার্থীরা

বাংলাদেশ কণ্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০১:৪৪:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মে ২০২৩ ৩৬ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি:
জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। পাঁচ সিটিতে ভোটের অগ্নিপরীক্ষা পার করে দ্বাদশ নির্বাচনে দলকে আরও আত্মবিশ্বাসী করতে চায় ক্ষমতাসীন দল। তবে বিএনপিকে বাদ দেওয়ায় পাঁচ সিটিতেই মেয়র পদে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় উচ্ছ্বসিত নৌকার মাঝিরা।
গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট এই ৫ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন আগামী ২৫ মে, ১২ জুন এবং ২১ জুন। ৩ এপ্রিল তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এসব সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিরোধী দল বিএনপি। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে অনড় দলটি। বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মূলত নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে গাজীপুরে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। জাহাঙ্গীর নির্বাচনে থাকলে নির্বাচনী মাঠের পরিবেশ ভিন্ন রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে ঋণখেলাপি হওয়ায় রোববার জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। যদিও জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেন, তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে, বৈষম্য করা হয়েছে এবং তিনি ঋণখেলাপি নন। তিনি হাইকোর্টে আপিল করবেন। অবশ্য জাহাঙ্গীর নিজেও শেষ পর্যন্ত ভোট দিতে না পারলেও মায়ের সঙ্গে মাঠে থাকতে পারেন। তবে রাজনীতির মাঠে অপরিচিত এই নারী আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান জানান, জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আমি স্বস্তি পেয়েছি। আমার দল হিসেবে, সাধারণ মানুষ এবং শান্তিপ্রিয় মানুষ আমার সঙ্গে আছে- সেজন্য আমি অবশ্যই স্বস্তি পাচ্ছি। নির্বাচনে আমি কাউকে প্রতিপক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবি না। সবাইকে নিয়ে স্বচ্ছ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চাই। আমি এই বার্তা দিতে চাই, কেউ আমাদের শত্রু নয়। আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এদিকে বিএনপি ছাড়া খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক অনেকটাই এগিয়ে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও স্বতন্ত্রসহ ৫ প্রার্থীর নাম প্রচার হচ্ছে এবং ইসলামী আন্দোলন দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল আউয়ালকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মুশফিকুর রহমান ও আগুয়ান ৭১ সামাজিক সংগঠনের আহ্বায়ক মো. আবদুল্লাহ চৌধুরীর নাম আলোচনায় রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। ফলে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের পথচলা খুবই মসৃণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ কেসিসির বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক দুইবারের মেয়র ও চারবারের এমপি। একবার দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এত হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে ছোট দলের প্রার্থী টিকবে না বলে মনে করছেন ভোটাররা। ফলে এবারের সিটি নির্বাচন খুবই একতরফা হবে বলে মনে করছেন তারা।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বেশ চিন্তিত রাজশাহীর বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বিএনপি নির্বাচনে না আসায় তিনিও চাপমুক্ত।

অন্যদিকে বরিশালের রাজনীতিতে নতুন মুখ আবুল খায়ের আবদুল্লাহ পুরোদমে। বিএনপি ছাড়া এবারের নির্বাচনে মাঠে রয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও বরিশাল মহানগরের সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন তাপস। প্রার্থী দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব, সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান সরোয়ার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা থাকলেও অংশ নিচ্ছেন না।

অন্যদিকে সিলেটে নতুন মুখ আওয়ামী লীগের প্রার্থী লন্ডন প্রবাসী নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্বাচনে জয়ের পথ সুস্পষ্ট। বিএনপির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে লড়বেন না, এটা প্রায় নিশ্চিত। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী মাঠ প্রস্তুত না হওয়ায় এ ঝুঁকি নিতে চান না মেয়র আরিফ।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, পাঁচ সিটিতেই আওয়ামী লীগ যোগ্য প্রার্থী দিয়েছে। যোগ্য লোকের প্রতি মানুষের আস্থা আছে। বিএনপির নির্বাচনে না আসাটা দেউলিয়াত্বের লক্ষণ। আন্দোলন-নির্বাচন একটি রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্য। বিএনপি সেই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, বিএনপি ঘোমটাপরা প্রার্থী দেয়। এই নির্বাচনেও দিয়েছে। তবে যোগ্য, দক্ষ ও উন্নয়নের পক্ষে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই জনগণ বিজয়ী করবে।

জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটিতে জয়ের সুবাস পাচ্ছেন নৌকার প্রার্থীরা

আপডেট সময় : ০১:৪৪:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিনিধি:
জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। পাঁচ সিটিতে ভোটের অগ্নিপরীক্ষা পার করে দ্বাদশ নির্বাচনে দলকে আরও আত্মবিশ্বাসী করতে চায় ক্ষমতাসীন দল। তবে বিএনপিকে বাদ দেওয়ায় পাঁচ সিটিতেই মেয়র পদে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় উচ্ছ্বসিত নৌকার মাঝিরা।
গাজীপুর, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট এই ৫ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন আগামী ২৫ মে, ১২ জুন এবং ২১ জুন। ৩ এপ্রিল তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এসব সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিরোধী দল বিএনপি। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে অনড় দলটি। বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মূলত নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে গাজীপুরে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। জাহাঙ্গীর নির্বাচনে থাকলে নির্বাচনী মাঠের পরিবেশ ভিন্ন রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে ঋণখেলাপি হওয়ায় রোববার জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। যদিও জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেন, তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে, বৈষম্য করা হয়েছে এবং তিনি ঋণখেলাপি নন। তিনি হাইকোর্টে আপিল করবেন। অবশ্য জাহাঙ্গীর নিজেও শেষ পর্যন্ত ভোট দিতে না পারলেও মায়ের সঙ্গে মাঠে থাকতে পারেন। তবে রাজনীতির মাঠে অপরিচিত এই নারী আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান জানান, জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় আমি স্বস্তি পেয়েছি। আমার দল হিসেবে, সাধারণ মানুষ এবং শান্তিপ্রিয় মানুষ আমার সঙ্গে আছে- সেজন্য আমি অবশ্যই স্বস্তি পাচ্ছি। নির্বাচনে আমি কাউকে প্রতিপক্ষ বা প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবি না। সবাইকে নিয়ে স্বচ্ছ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চাই। আমি এই বার্তা দিতে চাই, কেউ আমাদের শত্রু নয়। আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এদিকে বিএনপি ছাড়া খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক অনেকটাই এগিয়ে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও স্বতন্ত্রসহ ৫ প্রার্থীর নাম প্রচার হচ্ছে এবং ইসলামী আন্দোলন দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আবদুল আউয়ালকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মুশফিকুর রহমান ও আগুয়ান ৭১ সামাজিক সংগঠনের আহ্বায়ক মো. আবদুল্লাহ চৌধুরীর নাম আলোচনায় রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। ফলে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের পথচলা খুবই মসৃণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ কেসিসির বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক দুইবারের মেয়র ও চারবারের এমপি। একবার দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এত হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে ছোট দলের প্রার্থী টিকবে না বলে মনে করছেন ভোটাররা। ফলে এবারের সিটি নির্বাচন খুবই একতরফা হবে বলে মনে করছেন তারা।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বেশ চিন্তিত রাজশাহীর বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বিএনপি নির্বাচনে না আসায় তিনিও চাপমুক্ত।

অন্যদিকে বরিশালের রাজনীতিতে নতুন মুখ আবুল খায়ের আবদুল্লাহ পুরোদমে। বিএনপি ছাড়া এবারের নির্বাচনে মাঠে রয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও বরিশাল মহানগরের সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন তাপস। প্রার্থী দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব, সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান সরোয়ার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা থাকলেও অংশ নিচ্ছেন না।

অন্যদিকে সিলেটে নতুন মুখ আওয়ামী লীগের প্রার্থী লন্ডন প্রবাসী নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্বাচনে জয়ের পথ সুস্পষ্ট। বিএনপির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে লড়বেন না, এটা প্রায় নিশ্চিত। ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী মাঠ প্রস্তুত না হওয়ায় এ ঝুঁকি নিতে চান না মেয়র আরিফ।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, পাঁচ সিটিতেই আওয়ামী লীগ যোগ্য প্রার্থী দিয়েছে। যোগ্য লোকের প্রতি মানুষের আস্থা আছে। বিএনপির নির্বাচনে না আসাটা দেউলিয়াত্বের লক্ষণ। আন্দোলন-নির্বাচন একটি রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্য। বিএনপি সেই লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, বিএনপি ঘোমটাপরা প্রার্থী দেয়। এই নির্বাচনেও দিয়েছে। তবে যোগ্য, দক্ষ ও উন্নয়নের পক্ষে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই জনগণ বিজয়ী করবে।