ঢাকা ১১:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন:মাধবপুর-চুনারুঘাট নির্বাচনী হালচাল

বাংলাদেশ কণ্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : ০৭:২২:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩ ১০৩ বার পঠিত

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার হবিগঞ্জ-৪ মাধবপুর-চুনারুঘাট। পাহাড়টিলা ছড়া নদী ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সবুজ গালিচায় মোড়ানো চা বাগান বেষ্টিত। এ আসনটি তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে রয়েছে আওয়ামী লীগের দখলে। হবিগঞ্জ-৪ আসন মাধবপুর-চুনারুঘাট উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এই আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির রয়েছে একাধিক প্রার্থী, আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১০ হাজার ৪৮৫ জন। এর মধ্যে মাধবপুরে ২ লাখ ৬৭ হাজার ২শ। যাদের মাঝে পুরুষ ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬’শ ৫৩ জন। মহিলা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬’শ ৩৮জন ও ১ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে। আর চুনারুঘাট উপজেলা মোট ভোটার ২ লাখ ৪৩শ ১৯৫ জন, পুরুষ ১ লাখ ২১ হাজার ৩’শ ৩৮ জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৮শত ৫৭ জন। জানা যায়, ১৯৭০ এর নির্বাচন থেকে শুরু করে এ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী সবসময় বিজয়ী হয়েছেন। প্রয়াত সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তোফা, শহীদ ছয়বার এ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এ নির্বাচনী এলাকা মোট ২২ টি চা বাগান রয়েছে।

মূলত চা বাগানের শ্রমিকদের ভোট হচ্ছে নৌকা জয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। চা শ্রমিকদের ৩০ হাজার ভোট রয়েছে এখানে। ১৯৭৯ ও ১৯৮৮ সালে দু’বার জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার এ আসনে বিজয়ী হয়ে হুইপ ও কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির প্রার্থী হিসাবে সায়হাম গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ মো. ফয়সল এম.পি নির্বাচিত হন। কিন্তু তিন মাসের মাথায় সংসদ ভেঙ্গে যায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এ আসনে নৌকা নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। ২০১৯ সালের নির্বাচনে জাতীয় ঐক্য জোটের প্রার্থী মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের (বাচ্চু) কে পরাজিত করে আবারও অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এম.পি নির্বাচিত হয়। বর্তমানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী দায়িত্বে আছেন তিনি। আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় টিকেট প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন বেশ কয়েকজন নেতা। যাদের মধ্যে রয়েছেন মরহুম এনামুল হক মো শহীদের ছেলে নিজামুল হক মোস্তফা শহীদ রানা, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আকবর হোসেন জিতু সাবেক পিপি। আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, মাধবপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী (অসীম)। মাধবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি আলহাজ আতিকুর রহমান বলেন, এ আসনটি বরাবরই আওয়ামীলীগের। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করা হবে। আমাদের দল অনেক বড় নমিনেশন চাওয়ার অধিকার সবারই আছে। যারা নমিনেশন চাইবে তাদেরকে ও আমি অভিনন্দন জানাই।

মাধবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রহম আলী জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে টিকেট দিবেন তার পক্ষেই আমরা কাজ করব। অপর দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ সৈয়দ মো. ফয়সল রাজনীতির মাঠ থেকে দূরে রয়েছেন কিছুটা। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থী হিসাবে আবার ও দেখতে চায়। এছাড়াও মাঠে রয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি বর্তমান মাধবপুর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান আলহাজ এসএফএএম শাহজাহান। সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার। বিগত নির্বাচনে মাধবপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র বিএনপির নির্বাচিত হওয়ায় আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন নেতাকর্মীরা।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন:মাধবপুর-চুনারুঘাট নির্বাচনী হালচাল

আপডেট সময় : ০৭:২২:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর ২০২৩

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার হবিগঞ্জ-৪ মাধবপুর-চুনারুঘাট। পাহাড়টিলা ছড়া নদী ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সবুজ গালিচায় মোড়ানো চা বাগান বেষ্টিত। এ আসনটি তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে রয়েছে আওয়ামী লীগের দখলে। হবিগঞ্জ-৪ আসন মাধবপুর-চুনারুঘাট উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এই আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির রয়েছে একাধিক প্রার্থী, আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১০ হাজার ৪৮৫ জন। এর মধ্যে মাধবপুরে ২ লাখ ৬৭ হাজার ২শ। যাদের মাঝে পুরুষ ১ লাখ ৩৫ হাজার ৬’শ ৫৩ জন। মহিলা ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬’শ ৩৮জন ও ১ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে। আর চুনারুঘাট উপজেলা মোট ভোটার ২ লাখ ৪৩শ ১৯৫ জন, পুরুষ ১ লাখ ২১ হাজার ৩’শ ৩৮ জন, মহিলা ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৮শত ৫৭ জন। জানা যায়, ১৯৭০ এর নির্বাচন থেকে শুরু করে এ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী সবসময় বিজয়ী হয়েছেন। প্রয়াত সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তোফা, শহীদ ছয়বার এ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এ নির্বাচনী এলাকা মোট ২২ টি চা বাগান রয়েছে।

মূলত চা বাগানের শ্রমিকদের ভোট হচ্ছে নৌকা জয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। চা শ্রমিকদের ৩০ হাজার ভোট রয়েছে এখানে। ১৯৭৯ ও ১৯৮৮ সালে দু’বার জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার এ আসনে বিজয়ী হয়ে হুইপ ও কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির প্রার্থী হিসাবে সায়হাম গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ মো. ফয়সল এম.পি নির্বাচিত হন। কিন্তু তিন মাসের মাথায় সংসদ ভেঙ্গে যায়। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এ আসনে নৌকা নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। ২০১৯ সালের নির্বাচনে জাতীয় ঐক্য জোটের প্রার্থী মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের (বাচ্চু) কে পরাজিত করে আবারও অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এম.পি নির্বাচিত হয়। বর্তমানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী দায়িত্বে আছেন তিনি। আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় টিকেট প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন বেশ কয়েকজন নেতা। যাদের মধ্যে রয়েছেন মরহুম এনামুল হক মো শহীদের ছেলে নিজামুল হক মোস্তফা শহীদ রানা, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আকবর হোসেন জিতু সাবেক পিপি। আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, মাধবপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী (অসীম)। মাধবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি আলহাজ আতিকুর রহমান বলেন, এ আসনটি বরাবরই আওয়ামীলীগের। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করা হবে। আমাদের দল অনেক বড় নমিনেশন চাওয়ার অধিকার সবারই আছে। যারা নমিনেশন চাইবে তাদেরকে ও আমি অভিনন্দন জানাই।

মাধবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রহম আলী জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে টিকেট দিবেন তার পক্ষেই আমরা কাজ করব। অপর দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ সৈয়দ মো. ফয়সল রাজনীতির মাঠ থেকে দূরে রয়েছেন কিছুটা। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থী হিসাবে আবার ও দেখতে চায়। এছাড়াও মাঠে রয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি বর্তমান মাধবপুর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান আলহাজ এসএফএএম শাহজাহান। সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার। বিগত নির্বাচনে মাধবপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র বিএনপির নির্বাচিত হওয়ায় আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন নেতাকর্মীরা।