অর্থপাচার: এনআরবিসি ব্যাংককে ৫ লাখ টাকা জরিমানা

- আপডেট সময় : ০২:৫৩:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ৭৮ বার পঠিত

বাংলাদেশ কন্ঠ ।।
মানিলন্ডারিংয়ের তথ্য গোপন করায় এনআরবিসি ব্যাংককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যানসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনতে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, নানা অনিয়ম ও জালিয়াতিতে জড়িয়েছে ব্যাংকটি। একের পর এক অনিয়ম করেও তা গোপন রাখা হতো। অনিয়ম আড়াল করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছেও দেওয়া হতো মিথ্যা তথ্য। এতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বিভ্রান্ত করে আসছিল ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ চক্রটি। বিগত সরকারের প্রভাবশালী বলয়ের সহযোগিতায় এবং এনআরবিসি ব্যাংকের আলোচিত চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের ইশারায় এসব অপকর্ম চলে আসছিল।
জানা যায়, ব্যাংকটিতে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং তার অনুসারী কয়েকজনের বিশেষ গ্যাং তৈরি করা হয়। কর্মকর্তা ও অংশীজনদের জিম্মি করে অপরাধ ধামাচাপা দিতে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের ভগ্নিপতিকে অভিজ্ঞতা ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে অনিয়মের বৈধতা দেওয়া হয়েছে। আর সাবেক গভর্নর ফজলে কবীরকে নানা সুবিধা দিয়ে চুপ করিয়ে রেখেছিল পারভেজ তমালচক্র।
সম্প্রতি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো বাংলাদেশ ব্যাংকের গোপনীয় একটি প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এনআরবিসি ব্যাংকের ওআর নিজাম রোড শাখার হিসাবধারী মো. রেজাউল বশির চৌধুরীর সঞ্চয়ী হিসাবে দীর্ঘ সময় ধরে সন্দেহজনক লেনদেন চিহ্নিত হওয়া সত্ত্বেও তা বাংলাদেশ ব্যাংকে রিপোর্ট না করে গোপন করা হয়েছে। অথচ আইন অনুযায়ী এসব তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ইউনিটকে জানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এই অপরাধের জন্য ব্যাংকটিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জরিমানার এ অর্থ সাতদিনের মধ্যে পরিশোধ করা না হলে চলতি হিসাব থেকে তা আদায় করা হবে। পাশাপাশি এ অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
উদ্যোক্তাদের শেয়ারের তথ্য নিয়েও মিথ্যা তথ্য দিয়েছে ব্যাংকটি। এনআরবিসি ব্যাংকের ঘোষণা অনুযায়ী, বর্তমানে এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসির ৬৮ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা বা পরিচালক এবং ৩১ দশমিক ৯৪ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ধারণ করছেন। যা পরিদর্শন দলের কাছে ‘মিথ্যা’ হিসেবে ধরা পড়েছে।
এ কারণে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে ১৪ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ছয় মাসের মধ্যে ব্যাংকটির অনিবাসী উদ্যোক্তাদের ধারণকৃত শেয়ারের শতকরা হার অনধিক ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসব বিষয়ে জানতে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল এবং ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবিউল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।